বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার কে?

বিশ্বের সকল খেলার মাঝে ক্রিকেট অন্যতম। বিশ্বে ক্রিকেটকে ঘিরে ভক্তদের রয়েছে যত আবেগ ও উন্মাদনার গল্প। ক্রিকেটে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও পিছিয়ে নেয়। ক্রিকেটের বাইরেও আজ মহিলারা বিভিন্ন খেলায় নিজেদের পরিচিতি গড়ছেন, গড়ছেন অবিশ্বাস্য সব ইতিহাস। আজ এমনই এক তরুণীর ইতিহাস সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার সম্পর্কে আজকে আপনারা জানবেন। সেইসাথে জানবেন এই সুন্দরী মহিলার গড়া যত ইতিহাস এবং রেকর্ড সম্পর্কে।

তার গল্প জেনে আপনার মনে হতে বাধ্য, এ যেন বাস্তব জীবনের এক অল রাউন্ডার।

সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার হচ্ছে এলিসি পেরি। তিনি কেবল সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার নন, তার রয়েছে ক্রিকেটের সব রেকর্ড ও ইতিহাস।

চেহারার দৌরাত্ম্যে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি তিনি এগিয়ে গেছেন জাতীয় মেধায়।

এলিসি পেরি কে এবং কেন তাকে বিশ্বের সবচেয়ে সেক্সি মহিলা ক্রিকেটার বলা হয়, কেনোই বা তিনি বিশ্ব মঞ্চে এতটা জনপ্রিয় সেসব নিয়েই থাকছে আজকের পর্ব।

এলিসি পেরির জীবনী

তার পুরো নাম হচ্ছে এলিসি আলেকজান্দ্রা পেরি, যিনি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার । তিনি ১৯৯০ সালের ৩ নভেম্বর তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের শহরতলির ওয়াহরুঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বর্তমান বয়স প্রায় ৩৩ এর কাছাকাছি। তিনি সিডনির বিক্রফট্ পাবলিক স্কুলে তার শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেন।

এরপর তিনি পিম্বল লেডিস কলেজ থেকে তার উচ্চ মাধ্যমিক জীবন শেষ করেন। কলেজে থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতি ছিলেন প্রবল আগ্রহী।

তখন থেকেই তিনি ক্রিকেট এবং ফুটবলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন।

এছাড়াও তিনি কলেজে অধ্যয়নকালে ক্রীড়া ক্যাপ্টেন, অ্যাথলেটিক্স ক্যাপ্টেন ও ছিলেন ক্রিকেট ক্যাপ্টেনও।

কলেজে থাকাকালীন একইসাথে টেনিস, অ্যাথলেটিক্স, ফুটবল এবং গলফ খেলার প্রতি তার ছিল প্রবল আগ্রহ।

তিনি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে নিজের স্নাতক অর্জনে কর্মরত আছেন।

মূলত, এলিসি পেরি হচ্ছেন একজন অস্ট্রেলিয়ান ক্রীড়াবিদ, যিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ান জাতীয় ক্রিকেট দল এবং ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০০৭ সালে পেরির অভিষেক ঘটে। তিনি হচ্ছেন জাতীয় দলের একজন অল রাউন্ডার খেলোয়াড়।

ডান হাতে ব্যাটিং এবং ডান হাতে মিডিয়াম ফাস্ট বোলিং করেন অস্ট্রেলিয়ান এই ক্রিকেটার।

এলিসি পেরির রয়েছে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসেবে ক্রিকেট ও ফুটবল উভয় এসোসিয়েশন এর হয়ে বিশ্বকাপে খেলার রেকর্ড।

এলিসি পেরির বৈবাহিক জীবন

২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর তারিখে পেরি প্রকাশ্যে ম্যাট টুমুয়ার সাথে তার সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেন।

এবং তার ঠিক এক বছরেরও কম সময় পরে অর্থাৎ ২০১৪ সালের ২০ আগস্ট এ তারা তাদের বাগদান সম্পন্ন করেন।

এই জুটি ২০১৫ সালের ২০ নভেম্বর তারিখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।

তবে তাদের বিবাহের ঠিক ৫ বছর পর অর্থাৎ ২০২০ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

যদিও এরপর ২০২১ সালের দিকে গুঞ্জন উঠেছিল যে পেরি নতুন কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন।

তবে এ ব্যাপারে কোনো সত্যতা মেলেনি। সুতরাং এলিসি মেরি বর্তমানে সিঙ্গেল রয়েছেন।

এলিসি পেরির ক্যারিয়ার ও রেকর্ডস

২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া মহিলা দল বনাম নিউজিল্যান্ড মহিলা দলের মধ্যকার ম্যাচের মাধ্যমে সর্বপ্রথম ওডিআই ফরমেটে অভিষেক হয় পেরির।

টেস্ট ক্রিকেট ফরমেটে ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচে অংশ দেওয়ার মাধ্যমে তার প্রথম টেস্টে অভিষেক ঘটে।

একই বছরে টি টোয়েন্টি ফরমেটে অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে তার প্রথম বারের মত অভিষেক ঘটেছিল।

এভাবেই ক্রিকেট জগতে তার পা রাখা। এছাড়াও মাত্র ১৬ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে খেলেছিলেন তিনি।

এভাবেই প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে তিনি খেলেছেন ক্রিকেট ও ফুটবল উভয় বিশ্বকাপে।

পেরি প্রথম অস্ট্রেলিয়ান মহিলা ক্রিকেটার যেকিনা টি টোয়েন্টি ফরমেটে করেছেন ১০০০ এর বেশি রান এবং বল হাতে শিকার করেন ১০০ টির বেশি উইকেট।

২০১৯ সালে ১৫০টির অধিক উইকেট নেওয়ার ফলে তিনি হয়েছিলেন আইসিসির বিশ্বসেরা বোলারদের মধ্যে তৃতীয়।

২০১৮ সালের সালের ১৭ই নভেম্বর তারিখে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ এর অধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন পেরি।

এলিসি পেরির পুরস্কার ও অর্জনসমূহ

২০১৬ এবং ২০১৯ সালে উইজডেনে বিশ্বের সেরা মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে পুরস্কৃত হোন পেরি। ২০১৯ সালে আবারও ওডিআই ফরমেটে বর্ষ সেরা ক্রিকেটার এর পরিষ্কার পান তিনি।

একই বছরে স্পোর্টস NSW অ্যাথলিট অফ দ্য ইয়ার এর পুরস্কার জিতেন পেরি।

অন্যদিকে ২০১৬, ২০১৮ ও ২০২০ এই তিন মৌসুমে তার রয়েছে বেলিন্ডা ক্লার্ক অ্যাওয়ার্ড জেতার রেকর্ড।

২০১৭ এবং ২০১৯ এই দুই বছর আইসিসির বর্ষ সেরা মহিলা ক্রিকেটের হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার দরুন তিনি জিতেছিলেন Rachael Heyhoe Flint অ্যাওয়ার্ড।

এছাড়াও তার ব্যক্তিগত জীবনে রয়েছে বিভিন্ন প্রাপ্তির রেকর্ড।

ফুটবলে তার তেমন অর্জন না থাকার কারণ ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়া।

এটা সত্য যে পেরির ছিল ক্রিকেট ও ফুটবল উভয়েই দক্ষতা।

তবে যখন প্রশ্ন আসলো যেকোনো একটি ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়া তখন তিনি ক্রিকেটকে পছন্দ করেন। তার সাথে আইপিএল এর সম্পর্কও রয়েছে।

তিনি আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এর হয়ে খেলে থাকেন। শেষ মৌসুমে আরসিবির হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন ব্যাটে বলে।

কেন এলিসি পেরি এত জনপ্রিয়?

আমরা সাধারণ সেসব মানুষদের অনুসরণ করে থাকি তাদের মাঝে অসাধারণ সব প্রতিভা আছে। যারা অসম্ভবকে সম্ভব করতে জানে।

এলিসি পেরি এমন একজন মহিলা ক্রীড়াবিদ যিনি ফুটবল, ক্রিকেট, গলফ, টেনিস সব ধরনের খেলায় পারদর্শী ছিলেন আর তাই তিনি সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার ।

জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে তিনি গড়েছেন অসংখ্য রেকর্ড।

এছাড়াও মাঠের বাইরে তিনি বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত থাকেন।

খেলার মাঠের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এর সাথে সাথে তার সৌন্দর্যের কারণে তার অনুসারীর সংখ্যাটা অনেক।

১ মিলিয়নের অধিক মানুষ ইনস্টাগ্রামে তাকে অনুসরণ করে থাকছেন।

তিনি কেবল একজন জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ নন, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা ক্রিকেটার।

এলিসি পেরির মত একজন জনপ্রিয় এবং সুন্দরী ক্রিকেটার সম্পর্কে জেনে আপনার কেমন লাগলো সেটা অবশ্যই আমাদের জানাবেন। পরবর্তী পর্বে আপনারা কোন ক্রিকেটারদের গল্প শুনতে চান সেটাও চাইলে আমাদের জানিয়ে দিতে পারেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি এখানেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *