

সাকিব আল হাসান বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে এশিয়া কাপ ২০২৩ এবংওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩এ
তামিমের অধিনায়কত্ব প্রত্যাহারের পর এবার এশিয়া কাপ ২০২৩ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দেবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান । বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হয়ে আসন্ন এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্বকারী সাকিব আল হাসানের বর্তমান ফর্ম এবং অধিনায়কত্বের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত থাকছে আজকের পর্বে।
অবসর প্রত্যাহারের পর তামিম ইকবালের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হয়ে এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব পালনের কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল এবং বিসিবি এটা নিশ্চিত করেন যে তামিম ইকবাল ওডিআই ফরমেটে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সেদিন যদিও তামিমের পর কে অধিনায়ক হবেন সে বিষয়ে কেউ কিছু বলেননি।
তবে সবার সাথে আলোচনা শেষে সাকিবকে অধিনায়ক করে এশিয়া কাপ ২৩ এর স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। এবার সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপ খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বাংলাদেশী দর্শকদের এটাই ইচ্ছা ছিল যে বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দেশকে নেতৃত্ব দেবে। সাকিবের নেতৃত্বে যেন ভরসা পায় বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসান এর নিয়োগ
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে সকল ফরমেটে অধিনায়কত্বের দায়িত্বে আছেন। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়ে দলের নেতৃত্বও দিয়েছিলেন সাকিব। এছাড়াও ওডিআই ফরমেটে অধিনায়ক হিসেবে ভালোই করেছেন সাকিব। অধিনায়কত্বের বাইরে পরিসংখ্যানগত দিক থেকে ২৩৩ ওডিআই ম্যাচ খেলে তিনি সংগ্রহ করেন ৭ হাজারের বেশি রান। এছাড়াও তার ঝুলিতে রেকর্ড আছে ৯টি শতক এবং ৫৩টি অর্ধ শতকের।
পাশাপাশি বল হাতে ওডিআই ক্রিকেটে তিনি সর্বমোট উইকেট শিকার করেন ৩০২টি।
তার এই রেকর্ড সাফল্যের জন্য তাকে ভক্তরা “রেকর্ড আল হাসান” নামে ডেকে থাকেন।
Sportskeeda প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী সাকিব আল হাসান ওডিআই ক্রিকেট ৫০ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ২৩টি ম্যাচে বিজয়ী অধিনায়ক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এবং বোলার হওয়ার সাথে সাথেই সবচেয়ে অভিজ্ঞ অধিনায়ক হিসেবে অনেকেই সাকিবকে মেনে নিয়েছে।
রেকর্ড ঝুলিতে কমতি নেই সাকিবের, এবার কেবল অধিনায়ক হিসেবে একটি শিরোপা জেতার অপেক্ষা।
দুঃখজনক হলেও সত্যি এটাই যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এশিয়া কাপে এখনও পর্যন্ত কোনো শিরোপা জিততে পারেনি।
যেখানে পার্শ্ববর্তী দল ভারত সর্বোচ্চ ৭ শিরোপা জিতেছে এশিয়া কাপে।
আর তাই সবদিক থেকেই বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য হতে যাচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ।
ক্রিকেটে নেতৃত্বের তাৎপর্য
ক্রিকেটে একজন অধিনায়কের ভূমিকা অনেক। একটি ম্যাচে দলের হয়ে এগারো জন খেলোয়াড় মাঠে নামলেও, তাদের সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য একজন দক্ষ অধিনায়ক থাকা আবশ্যক।
এমন এক দক্ষ অধিনায়ক হিসেবে ভারতের সাবেক অধিনায়ক ধোনির কথা বলা যায়।
তার অসাধারণ অধিনায়কত্ব ভারতকে জিতিয়েছে অসংখ্য ম্যাচ।
ম্যাচ চলাকালীন উপস্থিতি বুদ্ধির প্রমাণ দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি।
আর তাইতো ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে সফল তিনি।
মাহেন্দ্র সিং ধোনি জানতেন কখন কোন সিদ্ধান্ত দলের প্রয়োজন, কখন রিভিউ নেওয়া উচিত কখন নয়, কখন পেসার আনা উচিত কখন স্পিনার। আর তাই তার এই ধূর্ততার জন্যই তিনি অধিনায়ক হিসেবে সফল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে সাকিবকে বলা হয় সবচেয়ে ধূর্ত ক্রিকেটার।
অনেকেই এটা বিশ্বাস করেন সাকিব আল হাসান সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখেন।
যেটি বাংলাদেশকে এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের মঞ্চে এগিয়ে রাখবে অনেকটাই।
দলের সেরা পারফরমেন্স বের করে আনতে একজন নেতার দায়িত্ব এবং হস্তক্ষেপ সবচেয়ে বেশি জরুরি।
সাকিব আল হাসান এর জন্য চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যাশা
এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেটে হয়ে অধিনায়কত্ব পালন করবেন সাকিব। তবে এটা সাকিবের জন্য অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অনেকটাই বেশি শক্তিশালী দল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সবার স্বপ্ন এবার বাংলাদেশ শিরোপা জিতবে।
অধিনায়ক সাকিব নিজেও একবার এক শো তে বললেন বাংলাদেশ ২০২৩ বিশ্বকাপ জিতবে কারণ এটি সাকিবের শেষ বিশ্বকাপ।
আর তাই স্বাভাবিকভাবেই দলকে এগিয়ে রাখার একটি বড় চ্যালেঞ্জ নিতে হবে তাকে।
তবে প্রত্যাশার জায়গা জুড়ে আছে বাংলাদেশের শক্তিশালী পেস বোলিং ইউনিট এবং ব্যাটিং ইউনিট।
বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনে লিটন, শান্ত, মুশফিক, সাকিব, হৃদয়ের মত খেলোয়াড় আছেন অন্যদিকে বোলিং পর্যায়ে তাসকিন, হাসান মাহমুদ, শরিফুল, মুস্তাফিজ রয়েছে প্রত্যাশার জায়গা জুড়ে।
দলের এই ধারাবাহিকতা সাকিবকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণে সাহায্য করবে।
এশিয়া কাপ ২০২৩ এর জন্য প্রস্তুতি
এশিয়া কাপের প্রস্তুতি হিসেবে সম্প্রতি আফগানিস্থানের সাথে টি টোয়েন্টি এবং ওডিআই সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল। ওডিআই সিরিজে হারলেও টি টোয়েন্টি সিরিজে নিজেদের সেরাটা প্রমাণ করেছে সাকিবরা।
সম্প্রতি লঙ্কান লিগে খেলেছেন সাকিব, লিটন, হৃদয়। আর তাই এশিয়া কাপের পূর্বে এটি তাদের একটি বড় অভিজ্ঞতা দিবে।
এশিয়া কাপের এবারের আসর যেহেতু শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্থান দুটি দেশে অনুষ্ঠিত হবে, সেহেতু পূর্বে থেকে শ্রীলংকায় খেলার অভিজ্ঞতা কাজে দেবে সাকিবদের জন্য।
এছাড়াও দলের অনুশীলন পর্ব তো আছেই। সব মিলিয়ে সাকিবের দল এবার প্রস্তুত এশিয়া কাপে খেলার জন্য।
যদিও এশিয়া কাপে তামিমের অনুপস্থিতিতে কিছু হলেও অসস্তিতে ফেলবে বাংলাদেশকে।
তবে অন্যান্য খেলোয়াড়দের ফর্ম এই দুশ্চিন্তাকে অনেকটাই দূরে সরিয়ে রাখবে।
ওডিআই বিশ্বকাপ ২০২৩ এর রোডম্যাপ
অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া ওডিআই বিশ্বকাপের রোড ম্যাপ হিসেবে বাংলাদেশ এশিয়া কাপ এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজকে বেছে নেবে।
যেহেতু এশিয়া কাপ ওডিআই ফরমেটে অনুষ্ঠিত হবে সেহেতু বিশ্বকাপকে ঘিরে একই স্কোয়াডে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
এছাড়াও এবারের এশিয়া কাপ জেতার লড়াইতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
কেননা সম্প্রতি ইংল্যান্ড, ভারত এর মত বড় বড় দলগুলোকে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ।
ওডিআই বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপের পূর্বে যেটি দলকে কিছুটা স্বস্তি দেবে।
তবে বাংলাদেশ দলের ওডিআই বিশ্বকাপ স্কোয়াড সম্পর্কে এখনও কিছু পরিষ্কার নয়।
বিশ্বকাপের রোডম্যাপ সম্পর্কেও কিছু প্রকাশ করেনি বিসিবি। আসন্ন এশিয়া কাপকেই দেওয়া হচ্ছে বেশি প্রাধান্য।
উপসংহার
এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি সম্পর্কিত বিভিন্ন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
খুব শীঘ্রই ওডিআই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের স্কোয়াড প্রকাশ করা হবে আমাদের সাইটে। ততক্ষণ পর্যন্ত সাথেই থাকুন, নিয়মিত আপডেট পেতে থাকুন।